কওমে লূত কে ভয়াবহ শাস্তি দেওয়ার কারণ

Spread the love

 সুন্দর ও সুঠাম দেহের দু’টো ছেলে মেহমান হলেন লূত আ. এর ঘরে। যেই তাকাবে, চোখ আটকে যাবে।  

লূত আ. দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন! কারণ তাঁর কওমের কুকর্ম সম্পর্কে জ্ঞাত! যেই জানতে পারবে লূতের ঘরে অসম্ভব সুন্দর দুটো ছেলে এসেছে— তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে। সবার থেকে মেহমানকে বাঁচানো অসম্ভব প্রায়! মেহমানের মেহমানদারি করতে না পারলে পয়গাম্বরির শানের খেলাফ হবে!

এদিকে লূত আ. এর স্ত্রী ছিলেন দুষ্ট প্রকৃতির! সমকামিতা সাপোর্ট করতো, কাফেরদের পক্ষপাতিত্ব করতো। সে মেহমানদের কথা বাইরে বলে দেয়। জানতে পেরে সবাই দৌড়তে দৌড়তে ছুটে আসে— যেন কেউ মিষ্টি বিতরণ করছে, তাড়াতাড়ি না গেলে ফুরিয়ে যাবে। সবাই দেওয়াল টপকিয়ে, দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করার চেষ্টা করতেছে। এদিকে লূত আ. আছেন মহা-দুশ্চিন্তায়! এই কঠিন মুসিবত থেকে একমাত্র আল্লাহই রক্ষা করতে পারবেন! 

লূত আ. দরজার এপাশ থেকে ডেকে বলেন, ‘হে আমার কওম! এ আমার কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং অতিথিদের ব্যাপারে আমাকে লজ্জিত করো না, তোমাদের মধ্যে কি কোন ভাল মানুষ নেই?’ [সূরা হুদ – ৭৮]

তারা বলল, ‘আমাদের ব্যাপারে তুমি নিশ্চয় জানো। তোমার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন আগ্রহ নেই। আর আমরা কি চাই, তাও তুমি অবশ্যই জান! [সূরা হুদ – ৭৯]

এবার লূত আ. আপসোস করে বললেন, তোমাদের বিরুদ্ধে যদি আমার শক্তি থাকত অথবা আমি কোন সূদৃঢ় আশ্রয় গ্রহণ করতে সক্ষম হতাম। [সূরা হুদ – ৮০] 

ছেলে দু’টো ছিলো আল্লাহর প্রেরিত ফেরেশতা। তারা এসেছেন কওমের আযাবের সংবাদ নিয়ে। এবার ফেরেশতারা নিজেদের পরিচয় বলে দিলেন, ‘হে লূত আ. আমরা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা।’ [সূরা হুদ – ৮১] ফেরেশতারা লূত আ.কে হুকুম দিলেন, ‘ভোর হওয়ার আগে আগে নিজের পরিবার এবং যারা ঈমান এনেছেন তাদেরকে নিয়ে এই এলাকা ত্যাগ করার জন্য!’ 

তারপর লূত আ. এর মাঝে ফিরে আসে স্বস্তি। লূত আ. বললেন, ‘তাদেরকে শাস্তি এখুনি দেয়া যায় না?’

ফেরাশতারা বললেন, ‘লূত, ভোর হতে খুব বেশি দেরি নয়। আপনি আপনার দলকে নিয়ে রওয়ানা দিন। হ্যাঁ, আযাব চলাকালীন সময় কেউ যেন পেছনে না তাকায়। তবে আপনার বিবি পেছনে তাকাবে, সেও আযাবে শামিল হবে।’

এই কথা শুনার পর লূত আ. দলবল নিয়ে রওয়ানা হলেন। ভোরের আলো ফুটতেই আযাব শুরু হলো। লূত আ. দ্রুত ঐ এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দিলেন এবং পেছনে না তাকানোর জন্য কঠিন হুশিয়ারি দিলেন। 

এদিকে ফেরেশতারা ঐ এলাকাকে উপুড় করে ধরেন। সবকিছু ঠিকঠাক ছিলো, কিন্তু কাফেররা সবাই নিচে পড়ে গেলো। পাথরের ভারী বর্ষণ হলো। পাথরের আঘাতে সবাই ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো। লূত আ. এর বিবি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিল না। তিনি পেছন ফিরে তাকালেন। তিনিও এই আযাবে পতিত হন। 

আল্লাহ তা’আলা অন্যান্য নবীদের কওমকেও আযাব দিয়েছিলেন ঠিকই! তবে সেই আযাব এত ভয়াবহ ছিলো না যে আযাব লূত আ. এর কওমকে দেওয়া হয়েছিল। কারণ সমকামিতা অতি-জগণ্য একটি কাজ, তাই তার আযাবও ছিলো ভয়াবহ! 

নবি সা. বলেন, আমি যে কুকর্মটি উম্মাতের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সর্বাধিক ভয় করি, তা হলো লূত আ. এর কওমের কুকর্ম! অন্য হাদিসে উভয়কে হত্যা করে ফেলার জন্যও বলা হয়ে। নবিজি সা. এর কথা মিথ্যা হয় নি। নবিজি সা. যেটার আশংকা করেছেন সেটাই হচ্ছে!

বিশ্বকাপের মাধ্যমে হয়তো বিষয়টা স্পষ্ট জেনেছেন। জার্মান জাতীয় বেইশ্যা দল মুখে হাত দিয়ে ফটোসেশান করেছিল। মন্ত্রীদের হাতে ওয়ান লাভ ব্যান্ড পড়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আরো কত কী? আল্লাহ আমাদের হেফাযত করুন! তাদের সাথে মুকাবিলা করার ক্ষমতা দিন! আমি কাতারকে ধন্যবাদ দিতে ভুলবো না, সবাইকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় আছে। 

মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম!

About the author
Fawzul Kabir

Leave a Comment