২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর আমেরিকা সারা বিশ্বের মুসলিমদের ওপর যে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহ-ত্যা কান্ড চালিয়েছে তা মূলত মুসলিম উম্মাহর ঈমানকে আরো জাগ্রত করেছে। ওয়াশিংটন পোষ্টের তথ্য মতে- পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মসজিদের ইমাম, লক্ষ লক্ষ আলেম ও ইসলামিক স্কলাররা মিলে যা করতে পারে নি, জেনারেল বুশ তা করে দেখিয়েছে। বুশ মুসলমানদের নিভৃত ঈমানকে জাগিয়ে দিয়েছে।জাগ্রত করেছে তাদের মৃত চেতনাকে।
১১ সেপ্টেম্বরের পর আমেরিকা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যু-দ্ধ ঘোষণা করে দেয়। আফগা-ন ও ইরাকে সরাসরি হামলা করে বসে। তারা আফ-গান ও ইরাকেই সীমাবদ্ধ ছিল না। অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও পর্দার আড়ালে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে দেয়। ইউরোপ-আমেরিকার মুসলিমদের ওপর শুরু হয় ভিন্ন কায়দায় হামলা। হাজার হাজার মুসলিমদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।ইউনিভার্সিটি গুলো থেকে মুসলিমদের বের করে দেওয়া হয়।
ইউরোপ-আমেরিকার সকল শপিংমল, হাসপাতাল, অফিস গুলোতে মুসলমানদের ওপর গুপ্ত হা-মলা করা হয়। চড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পৃথিবীর সকল ইসলামি দলগুলোকে জঙ্গি বাদী বা স-ন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেওয়া হয়। ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান সহ পৃথিবীর অনেকগুলো মুসলিমদেশ গুলো থেকে তরুণ-যুবক মুজা-হিদের ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়।
আমেরিকা সব করেছে। শুধু একটা জিনিস বুঝতে পারে নাই তা হলো, ছাই দিয়ে কখনো আগুন নিবানো যায় না। যেসব আমেরিকান মুসলিমরা নিজেদের আমেরিকান বলে পরিচয় দিতো। তারা এরপর থেকে নিজেদেরকে মুসলিম বলে পরিচয় দিচ্ছে। যারা শুধু নামেই মুসলিম ছিল তারা নিজেদের পরিচয় খুঁজতে শুরু করেছে। ইসলামকে সন্ত্রা-সী আখ্যা দিয়ে যে নামে মুসলমানদের উপর অত্যাচার করা হয়েছিল, সেই নামে মুসলিমরা পরে ইসলাম সম্পর্কে নতুন করে জানতে কোরান কিনা শুরু করে দিয়েছে।
যেসব নায়ক নায়িকা, ব্যাবসায়ী, চিত্রশিল্প, খেলোয়াড় নামে মুসলিম ছিল। তারা পরে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় খোঁজার জন্য নিজেকে ইসলামের প্রতি আরো ধাবিত করেছে। তারা বুঝতে পারে এবং ঘোষণা করে ‘আমারাই মুসলিম, আমরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি’।
২০০২ সালে ওয়াশিংটনের একটি পত্রিকায় তারা প্রকাশ করে- চলতি বছর আমেরিকায় যে পরিমাণে কুরআন বিক্রি হয়েছে বিগত ৫০ বছরেও তা হয় নি।শুধু ক্রেতাই বাড়েনি। পাঠকও বেড়েছে। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, পৃথিবীর ৫৬ মুসলিম দেশের পরিস্থিতি বিচার করে দেখা গেছে যে, নওমুসলিমদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তাদের সৈন্য সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আসলে দিয়াশলাইয়ের কাঠিতে আগুন থাকে।পানির স্পর্শ পেলেই তা পানি হয়ে যায়। কিন্তু কঠিন প্রস্তরের আঘাত পেলেই তা আবার জ্বলে উঠে পূর্ণ অগ্নিরুপে। তেমনি ইসলামকে যতই আঘাত করা হবে। ইসলাম আরো অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো জ্বলে উঠবে। আরো বলিষ্ঠ হবে ঈমানদারদের ইমান।
তথ্যসূত্র: বই- ভয় স্বপ্ন সংগ্রাম
লিখেছেনঃ সালাউদ্দিন কামরান