পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘মুসলিম হত্যা’ : পার্বত্য চট্টগ্রামকে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে মুক্ত করো!

Spread the love

বান্দরবানে ইসলাম গ্রহণ করার কারণে হত্যা করা হয়েছে নওমুসলিম ওমর ফারুক ত্রিপুরাকে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর লোক হয়েও খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করায় হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল একটি গ্রুপ। পরিবারের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সন্তু লারমার জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র শাখার ক্যাডাররা জড়িত।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের তুলাছড়ি আগা রায়চন্দ্র ত্রিপুরাপাড়ায় ৩৮ টি পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে পাঁচটি পরিবার কয়েক বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে, পাড়ার অন্য সবাই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। ইসলামগ্রহণকারী পরিবারগুলোর একজন ছিলেন ওমর ফারুক (জন্মগত নাম- পূর্ণচন্দ্র)। ইসলাম গ্রহণ করায় তাকে ক্রমাগত হুমকি দেয়া হচ্ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,  মসজিদে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে ত্রিপুরা থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হওয়া ওমর ফারুককে। পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, হত্যার সাথে সন্তু লারমার জেএসএসের সশস্ত্র শাখা জড়িত।
.
বাংলাদেশের পাহাড়ি ও দুর্গম অঞ্চলে খ্রিস্টান মিশনারীদের অপতৎপরতা চলছে। ময়মনসিংহের গারোদেরকে ধর্মান্তরিত করে বানানো হয়েছে খ্রিস্টান। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা তো খ্রিস্টান হচ্ছেই, মুসলিমরাও খ্রিস্টান হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অর্থলোভ ও জীবননাশের হুমকি কাজ করছে, এটা উল্লিখিত ঘটনায়ই বুঝা যায়।

বাংলাদেশে খ্রিস্টান মিশনারীসহ যাবতীয় ভিন্ন ধর্মীয় মিশনারী কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। নাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও ধর্মীয় সম্প্রীতি হুমকির মুখে পড়বে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্তু লারমা ও তার সশস্ত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে অতি সত্ত্বর ব্যবস্থা না নিলে ধীরে ধীরে এরা এমন বিষবৃক্ষে পরিণত হবে, যেটা  বাংলাদেশকে টুকরো করে ফেলবে। ইতিমধ্যেই তারা ‘জুম্মল্যান্ড’ নামের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য তারা সংগঠিত হচ্ছে, এটা সহজবোধ্য ব্যাপার। নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক শক্তি ভারত তাদের যাবতীয় সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতে যদি যুদ্ধ হয়, সেখানেও ভারত অস্ত্র ও বাহিনি দিয়ে সহযোগিতা করবে, এতে সন্দেহ নেই।

এই সন্ত্রাসী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কিভাবে নিরস্ত্রীকরণের আওতায় আনা যায়, এবং যারা অস্ত্র জমা দিতে অস্বীকার করবে, তাদেরকে কিভাবে শায়েস্তা করা যায় তা নিয়ে জাতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এদের গুরু সন্তু লারমাকেও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
.
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য প্রয়োজন মেগা প্রজেক্ট।  রাস্তা-ঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ইসলামী সেন্টার প্রতিষ্ঠাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতেই হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক কতিপয় ছাত্র ও শিক্ষক বুদ্ধিজীবী আছেন, যারা পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পছন্দ করেন না। যখনই কোনো রিসোর্ট কিংবা রাস্তাঘাট নির্মানের কথা উঠে, অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা উঠে, তারা বলেন,

“পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈচিত্র ধ্বংস করা হচ্ছে এবং সেখানের জনগণের নিজস্ব সংস্কৃতির উপর স্বাধীন হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এটা হতে দেয়া যাবে না, পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্ষায় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে দেয়াল লিখন, মিছিল, মিটিং। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য সেখানের জনগণের বিপদে খুব দ্রুত সাহায্য নিয়ে পৌঁছাতেই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অধিক পুলিশ ফাড়ি প্রয়োজন। উপরে ওমর ফারুক নামের নওমুসলিম ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনার সময়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনি দ্রুত পৌঁছাতে পারে নি। দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্ট এভাবে বিষয়টা জানাচ্ছে,

“খবর পেয়ে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছেন। দুর্গম ও বৃষ্টি কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগছে বলে জানা গেছে।”

এই যে যোগাযোগ সমস্যা, এটা নিয়ে কাজ না হলে কিভাবে কোনো দুর্ঘটনা, সন্ত্রাসী হামলা মোকাবিলা করা যাবে? তাহলে কেন একটা শিক্ষিত গোষ্ঠী  (বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ) ক্রমাগত পার্বত্য চট্টগ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নের বিরোধিতা করেন? তাহলে কি উত্তর এটা যে, তারাও এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগী? অবস্থাদৃষ্টে এটাই মনে তো মনে হয়!

আমি ৫-৬ বছর আগে শুনেছিলাম, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচুর পরিমাণ ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা দিয়ে পারমাণবিক বোমা বানানো সম্ভব। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কুনজর নাকি এদিকে। তাছাড়া সেখানে খনিজ সম্পদের পরিমাণও অনেক। এই কথাটা আমাকে একজন বন্ধু জানিয়েছিলেন, যাকে আমি জ্ঞানী মনে করি।
.
ওমর ফারুক মসজিদ থেকে নামাজ আদায় করে ফেরার পথে শাহাদাত বরণ করেছেন। ইসলামপন্থী গণমাধ্যমকর্মী, সোশ্যাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট ও সেলিব্রেটিরা এটা নিয়ে একদম চুপ। আমাদের একজন ভাই গতকাল শহীদ হয়েছেন, এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো প্রতিবাদ চোখে পড়ে নি। অনলাইনে সক্রিয় সবার প্রতি উদাত্ত আহবান, এ বিষয়টি নিয়ে আপনারা সরব হোন। প্রতিবাদ করুন।
.

|| পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘মুসলিম হত্যা’ : পার্বত্য চট্টগ্রামকে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে মুক্ত করো! ||
~ মুহাম্মদ খালিদ সাইফুল্লাহ

About the author
Fawzul Kabir

Leave a Comment